মঙ্গল শোভাযাত্রায় মুগ্ধ নেদারল্যান্ড

মঙ্গল শোভাযাত্রায় মুগ্ধ নেদারল্যান্ড

প্রেস রিলিজ, ১৫ এপ্রিল ২০১৭: নেদারল্যান্ডে আজ বাংলাদেশ হাউজে প্রায় পাঁচশ অতিথির উপস্থিতিতে উদযাপিত হলো পহেলা বৈশাখ আর প্রথমবারের মতো সকলে অংশ নিল ইউনেস্কো স্বীকৃত মঙ্গল শোভাযাত্রায়। দেশি-বিদেশি অতিথিদের সকলে মঙ্গল শোভাযাত্রার মাধ্যমে তুলে ধরে এবারের প্রতিপাদ্য”শান্তির জন্য সংস্কৃতি”। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে দেশি-বিদেশি শিল্পীদের উপস্থাপনা মুগ্ধ করে সকলকে। দর্শকের কাতারে ছিলেন দি হেগের ডেপুটি মেয়র, ভারত, শ্রীলংকা, ভিয়েতনাম, ইয়েমেন ও মালয়েশিয়ার রাষ্ট্রদূত, বিভিন্ন দেশের কূটনীতিক এবং নেদারল্যান্ড পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাবৃন্দ। নেদারল্যান্ডের প্রবাসী বাঙালীদের পাশাপাশি বেলজিয়াম, জার্মানি, পোল্যান্ড, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স সহ বিভিন্ন দেশ থেকে আগত বাঙালীরা অংশ নেন এই উৎসবে। আর দূতাবাসের প্রচেষ্টায় বাংলাদেশের বিভিন্ন অনুষ্ঠানও পরিচিতি পেতে শুরু করেছে হেগের আন্তর্জাতিক অঙ্গনে। তারই ফলশ্রুতিতে ঐতিহ্যবাহী বৈশাখী পোষাকে বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে যোগ দেয় উল্লেখযোগ্য সংখ্যক বিদেশী।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত রাষ্ট্রদূত ও বিশেষ অতিথিবৃন্দ।

বর্ষবরণের বর্ণছটায় বাংলাদেশ হাউজ নামে পরিচিত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতের বাসভবন নানা রঙের পোস্টার, ব্যানার, ফেস্টুন ইত্যাদি দ্বারা সাজানো হয় সম্পুর্ণ দেশীয় আঙ্গিকে। অনুষ্ঠানের প্রথম ভাগে স্থানীয় শিল্পীদের সঙ্গীত, নৃত্য, কবিতা আবৃত্তি ইত্যাদি পরিবেশনার পর দ্বিতীয় পর্বে ছিল স্থানীয় জনপ্রিয় শিল্পী আয়েশার মন-মাতানো পরিবেশনা। বসন্তের এই রাঙা প্রভাতে উপস্থিত সকলে নিজেদের রাঙিয়েছেন লাল-সাদায় আর বঙ্গ-ললনারা দিয়েছেন মেহেদী-আলতা আর শিশুরা রাঙিয়েছে তাদের মুখমন্ডল।

বক্তব্য রাখছেন রাষ্ট্রদূত শেখ মুহম্মদ বেলাল

অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি দি হেগের ডেপুটি মেয়র রাবিন বালদেব সিং তাঁর বক্তব্যে বৈচিত্র ও অন্তর্ভুক্তির উপর গুরুত্বারোপ করেন। রাষ্ট্রদূত শেখ মুহম্মদ বেলাল পহেলা বৈশাখের উৎসবকে সার্বজনীন একটি উৎসব হিসেবে পরিচয় করিয়ে দেন। তিনি ইউনেস্কো কর্তৃক সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য হিসেবে মঙ্গল শোভাযাত্রার স্বীকৃতিকে একটি উল্লেখযোগ্য অর্জন হিসেবে উল্লেখ করেন। তিনি প্রবাসী বাঙালীদের উৎকৃষ্ট দৃষ্টান্তসমূহ অনুসরণ করে একটি সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তোলার আহ্বান জানান।

সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে কেয়া করের একটি পরিবেশনা

অনুষ্ঠানে প্রবাসী বাংলাদেশী শিশুদের সাংস্কৃতিক উপস্হাপনা সকলের প্রশংসা কুড়ায়। বাঙালী সংস্কৃতিকে আঁকড়ে ধরে থাকা প্রবাসী বাংলাদেশী শিল্পীরা সুরে সুরে মুগ্ধ করেন উপস্থিত দর্শক-শ্রোতাদের নানা রঙের বাহারী পোষাকে সজ্জিত ছোট্ট শিশুরা  গানের তালে তালে নাচের সুযোগ হাতছাড়া করেনি। এছাড়া স্থানীয় ব্যান্ড ত্রিমাত্রিকের পরিবেশনা সকলকে মুগ্ধ করে।

স্থানীয় কম্যুনিটি সদস্যবৃন্দ তাঁদের স্টলে পসরা সাজায় নানা রকম দেশী পিঠা-পুলি ও খাবারের। মধ্যাহ্ন ভোজের মেনুতে বিভিন্ন খাবারের মধ্যে ছিল রকমারী ভর্তা-ভাজি ইত্যাদি। এছাড়া বিভিন্ন রকম ঐতিহ্যবাহী মিষ্টি পরিবেশন করা হয় অতিথিদের মাঝে। এরই মাঝে স্বনামধন্য ডাচ তথ্য-প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান সিমসলুশনের ২৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে সকলকে কেক পরিবেশন করা হয়।  এলাকা জুড়ে প্রতিধ্বনিত হয় শুধু “শুভ নববর্ষ” যেন প্রবাসী বাঙালীদের দীর্ঘদিনের প্রতীক্ষা ছিল এমন একটি দিনের জন্য।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*