“বসনিয়ার দুর্দিনে বাংলাদেশের অবদান কখনও ভুলবেনা বিহাচবাসী” – বসনিয়ায় বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত শেখ মুহম্মদ বেলালের সাথে সাক্ষাতকালে বসনিয়ার বিহাচ প্রদেশের প্রধানমন্ত্রী হুসেন রসিচ একথা বলেন। বিহাচ প্রদেশের প্রধানমন্ত্রী হুসেন রসিচের আমন্ত্রণে নেদারল্যন্ডে আবাস সহ বসনিয়ায় বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত শেখ মুহম্মদ বেলাল বর্তমানে সস্ত্রীক ৩ দিনের সরকারী সফরে বিহাচে অবস্থান করছেন।
১৯৪-৯৫ সালে বসনিয়ায় যুদ্ধ চলাকালীন সার্বিয়ান বাহিনী পরিবেষ্টিত বসনিয়ান ছিটমহল বিহাচে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনীর অংশ হিসাবে দায়িত্ব পালনকারী বাংলাদেশী সৈন্যদের প্রতি প্রধানমন্ত্রী হুসেন রসিচ কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন। যুদ্ধকালে বাংলাদেশের শান্তিরক্ষীরাই ছিল বহি:বিশ্বের সাথে যোগযোগের জন্য বসনিয়ানদের অবলম্বন – জানান তৎকালীন বসনিয়ান কমান্ডার মিরসাদ সালমানোভিচ। বিহাচের প্রধানমন্ত্রী হুসেন রসিচ বাংলাদেশী শান্তিরক্ষী সদস্যদের একটি প্রতিনিধি দলকে বিহাচে আমন্ত্রণ জানান। তাঁরা যুদ্ধকালীন একসাথে কাজ করা বাংলাদেশের শান্তিরক্ষী ও বসনিয়ান যোদ্ধাদের মধ্যে আরও বেশী আদান-প্রদান নিশ্চিত করতে তাঁদের আগ্রহের কথা জানান এবং শান্তিরক্ষীদের ভূমিকার স্বীকৃতি স্বরুপ একটি স্মৃতিস্তম্ভ নির্মানের আকাঙ্ক্ষা ব্যক্ত করেন।
যুদ্ধবিদ্ধস্ত বিহাচের পুনর্গঠনের কাজ এখনও চলছে। বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত প্রধানমন্ত্রীকে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে ধারাবাহিক উন্নয়নের একটি চিত্র তুলে ধরেন এবং ব্যবসা-বানিজ্য ও বিনিয়োগে বসনিয়াকেও এগিয়ে আসার আমন্ত্রণ জানান; বিশেষ করে তৈরী পোষাক, আসবাব-পত্র, পর্যটন, শিক্ষা, প্রভৃতি ক্ষেত্রে দুদেশের সহযোগিতার সুযোগ রয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। প্রধানমন্ত্রী হুসেন রসিচও বাংলাদেশে চলমান উন্নয়ন কর্মকান্ডের বর্ণনায় মুগ্ধ হন এবং একসাথে কাজ করার আগ্রহ ব্যক্ত করেন। প্রধানমন্ত্রী দুদেশের ইতিহাস ও ধর্মীয় মিলকে সামনে রেখে এগিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার করেন।
রাষ্ট্রদূত বেলাল বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় কিভাবে বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে বাংলাদেশের শান্তিরক্ষীবৃন্দ কিভাবে জীবন বাজি রেখে কাজ করে যাচ্ছেন তার একটি বর্ণনা দেন। রাষ্ট্রদূত আরও বলেন, “জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্ব নয় মাস ব্যাপী যুদ্ধশেষে স্বাধীন বাংলাদেশ ভবিষ্যত প্রজন্মকে যুদ্ধের অভিশাপ থেকে মুক্ত করে বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।”
সাক্ষাত শেষে বিহাচের ভেটেরান বিষয়ক মন্ত্রী জেভাদ মালকচ বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতকে মধ্যাহ্ন ভোজে আপ্যায়ন করেন। সাক্ষাতকালে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতের সাথে উপস্থিত ছিলেন তাঁর সহধর্মিনী ড: দিলরুবা নাসরিন ও দূতাবাসের কর্মকর্তা গৌতম চন্দ্র সাহা।
Be the first to comment