নেদারল্যান্ডসের দি হেগ-এ যথাযোগ্য মর্যাদায় স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস পালন
২৭ মার্চ ২০১৭, দি হেগ। ৪৬তম মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস পালনের কর্মসূচীর অংশ হিসেবে আজ সোমবার, ২৭ মার্চ ২০১৭ সন্ধ্যায় নেদারল্যান্ডের দি হেগে বাংলাদেশ হাউজে একটি অভ্যর্থনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। লাল-সবুজের সজ্জায় বাংলাদেশ হাউজ এদিন বরণ করে বিপুল সংখ্যক স্থানীয় গণ্য-মান্য ব্যক্তি, কূটনিতিক, বিচারক, আন্তর্জাতিক সংস্থার কর্মকর্তা, শিক্ষাবিদ, বিজ্ঞানী, ব্যবসায়ী প্রতিনিধি, সাংবাদিক ও পেশাজীবি এবং উল্লেখযোগ্য সংখ্যক প্রবাসী বাংলাদেশীকে। অতিথিবৃন্দ উপভোগ করেন বাংলাদেশী সংস্কৃতি, খাবার ও আলোচনামূখর একটি বর্ণিল সন্ধ্যা।
মান্যবর রাষ্ট্রদূত ও মিশনের কর্মকর্তারা আগত অতিথিবৃন্দকে বাংলাদেশী আতিথেয়তায় সাদর অভ্যর্থনা জানান এবং তাঁদের সাথে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। মান্যবর রাষ্ট্রদূত আগত অতিথিদের উদ্দেশ্যে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যের শুরুতেই বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে জাতির জনকের অবিসংবাদিত নেতৃত্বের কথা শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করেন। তিনি সশ্রদ্ধ চিত্তে স্মরণ করেন মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে আত্মদানকারী জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের। রাষ্ট্রদূত বেলাল বাংলাদেশকে একটি উন্নয়ন বিস্ময় হিসেবে উল্লেখ করে আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রে তার সাম্প্রতিক অর্জনসমূহ তুলে ধরেন। “বাংলাদেশ তার উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় একটি উত্তেজনাপূর্ণ সময় অতিবাহিত করছে” উল্লেখ করে তিনি ডাচ ব্যবসায়ীদের এই উন্নয়ন মিছিলে শরিক হবার আহ্বান জানান। রাষ্ট্রদূত তার ভাষনে বাংলাদেশ ও নেদারল্যান্ডের মধ্যে অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক উন্নয়নে নেদারল্যান্ডে বাংলাদেশী জনগণের অবদানের কথা স্বীকার করে তাঁদের অভিনন্দন জানান। তিনি ডাচ-বাংলা দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের বিভিন্ন দিক সম্পর্কে আলোকপাত করেন এবং ডাচ প্রধানমন্ত্রীর আমন্ত্রণে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নেদারল্যান্ড সফরের পর এ সম্পর্ক গভীরতর হয়েছে বলে জানান।
ডাচ পররাষ্ট্রমন্ত্রী বার্ট কুন্ডার্সের প্রতিনিধি হিসেবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পরিচালক পিটার পটম্যান অভ্যর্থনা অনুষ্ঠানে যোগ দেন। পটম্যান তাঁর সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সাম্প্রতিক অর্জনের প্রশংসা করেন এবং ভবিষ্যতেও বাংলাদেশের পাশে থাকার অঙ্গীকার ব্যাক্ত করেন। তিনি রাষ্ট্রদূত বেলালের বক্তব্যের প্রতিধ্বনি করে বাংলাদেশকে ডাচ বাণিজ্য ও বিনিয়োগের অন্যতম গন্তব্য হিসেবে পরিচয় করিয়ে দেন।
মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ হাউজকে বাংলাদেশের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের সাথে সামন্জস্য রেখে লাল-সবুজে সাজানো হয়। অতিথিদের জন্য প্রবেশপথে বিছানো হয় লাল গালিচা আর পথের দুপাশ সজ্জিত করা রং-বেরং ফুল আর ‘বিউটিফুল বাংলাদেশ’ এর পরিচায়ক ব্যানার দ্বারা। আমন্ত্রিত অতিথিরা লাল-সবুজ সাজ-সজ্জার ভূয়সী প্রশংসা করেন; তাঁদের অনেককেই ফুল দিয়ে তৈরী বিশালাকায় বাংলাদেশের পতাকার সাথে ছবি তুলতে দেখা যায়। অনুষ্ঠানের নেপথ্যে যন্ত্রসঙ্গীতে বাজে দেশাত্মবোধক গান আর প্রদর্শিত হয় বিউটিফুল বাংলাদেশের প্রামাণ্যচিত্র। অতিথিবৃন্দ অনুষ্ঠানে পরিবেশিত বাংলাদেশের মুখরোচক খাবারের প্রশংসা করতে ভোলেননি।
উল্লেখ্য যে ইতোপূর্বে গত ২৬ মার্চ বাংলাদেশ দূতাবাসে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের আনুষ্ঠানিক কর্মসূচী পালন করা হয়। জাতীয় দিবস উপলক্ষে মহামান্য রাষ্ট্রপতি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, মাননীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর প্রদত্ত বানীসমূহ পাঠ করা হয় এবং মহান স্বাধীনতা দিবসের তাৎপর্য বিষয়ে আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।
Be the first to comment